মোঃ ছিদ্দিক ভোলা প্রতিনিধিঃ
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে দারিদ্র্যের শেকলে বাঁধা উপকূলের জেলে জীবন। সমুদ্রে দস্যু আর দুর্যোগের আতঙ্ক কাটিয়ে কিনারে ফিরতে না ফিরতেই পড়তে হয় দাদনদারদের রোষানলে।হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয় কড়ায়-গন্ডায়। শুণ্য হাতেই ফিরতে হয় ঘরে।দিন আনা দিন খাওয়া জেলে পরিবারের অবস্থা বদলায় না। জীবনভর জেলে পেশায় থেকেও এক টুকরো সম্পদ গড়তে পারে না। দৌলতখান উপজেলা মেঘনার কূল ঘেঁষে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এক বিপন্ন জনপদ। হাজারো জেলের বসবাস এখানে।পৈত্রিক পেশাকে এখনো ধরে রেখেছেন সাহসি জেলেরা।এ জনপদে শিক্ষার আলো পৌঁছালেও শিশুদের মধ্যে শিক্ষা গ্রহণের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।আর লেখাপড়া করানোর টাকা নাই বলে জেলেরাও তাদের শিশুদের পড়াশুনা করাতে চান না। তাই এ জনপদের শিশুরা শিক্ষিত না যেন দক্ষ জেলে হওয়ার স্বপ্নেই বিভোর।নদী ভাঙনে দিশেহারা ওই জনপদে এক সময় সব থাকলেও এখন সম্বলহারা মানুষের বসতি ছাড়া কিছুই নেই। সেখানকার এক তৃতীয়াংশ বসতি জেলে। নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা।বই খাতা, আর খেলাধূলা নিয়ে শিশুদের মেতে ওঠার কথা থাকলেও যেন রামদাসপুরের চিত্র ভিন্ন। এখানকার শিশুরা খেলা করছে নৌকা নিয়ে। নিজেদের তৈরি নৌকা ও ট্রলার ভাসিয়ে দিচ্ছে নদীতে। আধুনিক সভ্যতা থেকে পিছিয়ে পড়া এ জনপদে অভিভাবকদের অসচেতনতা ও নদী ভাঙনের কারণেই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেনা শিশুরা।তেমনি এক শিশু ভোলার দৌলতখানের ভবানীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের জাফর মাঝির ছেলে ১১ বছরের শিশু জাহিদ হোসেন যে হাতে থাকার কথা ছিল বই, সে হাতে ইলিশের জাল।যে হাতে রঙ-পেন্সিলে ছবি আঁকার কথা ছিল, সে হাতে বইতে হচ্ছে মাছের বোঝা। যে চোখ স্বপ্ন দেখত এক সোনালী আগামীর, সে চোখ শুধুই রোজগারের পথ খুঁজে বেড়ায়।
Leave a Reply